ভাত খেকো মানুষ হিসেবে আমাদের বেশ নাম ডাক রয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ভাত আর মাছ এই দুইয়ে মিলে এক সময় ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ বলেই আমাদের চিহ্নিত করা হতো। বাঙলার প্রতি গৃহস্থের ঘরেই এক সময় লালন করা হতো দুগ্ধবতী গাভী। ফলে দুধ আর ভাত মিলে ‘দুধে ভাতে বাঙালি’ এরকম একটি অবস্থাও এদেশে বিরাজ করছিল এক সময়। পরে অবশ্য মাছের প্রাপ্যতা কমে যাওয়ায় ‘ডালে ভাতে বাঙালি’ এরকম একটা প্রবাদ প্রায় চালু হতে না হতে ডালের মূল্যবৃদ্ধি তা আর বেশি দূর এগোতে দেয়নি। এসব আলোচনার মূল কারণ এই যে, সময়ে সময়ে আমাদের খাদ্যাভ্যাস খানিক পরিবর্তন যে এসেছে তা তুলে ধরা। আবার এটিও স্পষ্ট করা যে, ভাতের সহযোগী অন্যান্য খাদ্যে খানিক পরিবর্তন এলেও ভাত সেই প্রাচীন কাল থেকেই বাঙালির প্রধান খাদ্য হিসেবে তার স্থান অক্ষুণ্ণ রেখেছে। সে কারণে ধান আমাদের প্রাণ আর ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য।
বলা বাহুল্য ভাত আমাদের একমাত্র খাদ্য নয়, প্রধান খাদ্য। বলা নিষ্প্রয়োজন যে, আমাদের ভাত খাওয়াটা নির্বিঘা করার জন্য সাথে কিছু তরকারির প্রয়োজন হয়। সেসব তরকারি তেল মশলা দিয়ে এমনভাবে রান্না করা হয় যেন তা ভাত খাওয়াটাকে সহজতর ও আনন্দদায়ক করে তুলে। অনেক সময় মশলার বাহুল্য তরকারিতে এতটাই থাকে যে তাতে কম তরকারি দিয়ে খানিক বেশি ভাত খাওয়া যায়। লক্ষ্য আসলে আমাদের ভাতটা খাওয়া। এতে শর্করা, আমিষ, তেল বা চর্বি, ভিটামিন আর খনিজ দ্রব্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে পেটপূর্তির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করাও যে একান্ত আবশ্যক সেটি প্রায়ই আমরা ভুলে থাকি। সে জন্যই যুগ যুগ ধরে ভাতকে প্রধান ধরে অন্য যত খাবারের আয়োজন। সত্যি সত্যিই সে কারণে আমরা ‘ভেতো বাঙালি’ হয়ে উঠেছি।
ভাত যে আমাদের কত প্রিয় তার আরেক প্রমাণ হলো এদেশে হাজার হাজার রকম ধান জাত বাছাই করে নেয়া আর এসব জাত আবাদ করা। এলাকা ভিত্তিতে কৃষকরা তাদের মতো করে বাছাই করে নিয়েছিলেন ভিন্ন ভিন্ন রকম সব ধান জাত। স্বাদে গন্ধে বর্ণে আকার-আকৃতিতে এসব জাত একটা আরেকটা থেকে ছিল ভিন্ন রকম। নানা রকম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিল এসব জাত। বিজ্ঞানীদের হিসাব মতে, এদেশে ধান জাতের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার। ভাতের প্রতি কি গভীর মমতা থাকলে পরে এত সংখ্যক জাত সংরক্ষণ করে আসছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষরা দীর্ঘকাল ধরে তা সহজেই অনুমেয়।
আসলে বিষয়টি তো ভাত আর গমের মধ্যকার কোনো দ্বন্দ্ব নয়। নয় এমনকি ভাত, গম আর আলুর মধ্যেও। বিষয়টা হলো একজন মানুষের প্রতিদিন কতটুকু শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা উচিত সেটি। একথা সত্য যে, ভাত কেবল শর্করাই সরবরাহ করে না পাশাপাশি আমিষও সরবরাহ করে। পূর্ণ বয়স্ক একজন মানুষকে শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য প্রতিদিন শূন্য দশমিক আট গ্রাম আমিষ গ্রহণ করতে হয়। সে হিসেবে একজন ৬০ কেজি ওজনের মানুষকে গ্রহণ করতে হয় (৬০×০.৮) গ্রাম অর্থাৎ ৪৮ গ্রাম আমিষ। এখন আমরা যে চাল খাই তাতে গড়পড়তা আমিষ থাকে কত ভাগ সেটি জানা দরকার। অধিকাংশ কলে ছাঁটা সাদা চালে আমিষ থাকে গড়পড়তা শতকরা ৬.৮ ভাগ। প্রতি ১০০ গ্রাম চালে যদি ৬.৮ গ্রাম আমিষ ধরা হয় তবে ৪৮ গ্রাম আমিষ পেতে হলে লাগে ৭০৫ গ্রামের বেশি চাল। ২০১০ এর FAO এর গবেষণা মতে আমরা গড়ে প্রতিদিন দানাশস্য গ্রহণ করছি ৪৬৪ গ্রাম যার ৪১৬ গ্রামই চাল। চাল হতে তাহলে আমরা পাচ্ছি প্রায় ২৮ গ্রাম আমিষ। অর্থাৎ হিসেব অনুযায়ী গড়ে চাল থেকে আমরা পাচ্ছি শতকরা ৫৮ ভাগ প্রতিদিনের আমিষ। ব্যক্তিবিশেষে ভাত খাবার ওপর নির্ভর করে এর রকমফের তো হতেই পারে। এ হিসাবের অর্থ ভাত আমাদের শর্করা এবং আমিষ দুটোই সরবরাহ করছে।
সারণি-১ : কলেছাঁটা চাল ও ঢেঁকিছাঁটা চালে আমিষ, আয়রন, জিংক ও আঁশের মাত্রা
চালের প্রকার |
আমিষ (মিলি গ্রা./১০০ গ্রা.) |
আয়রন |
জিংক |
আঁশ (মিলি গ্রা./১০০ গ্রা.) |
সাদা মসৃণ |
৬.৮ |
(মিলি গ্রা./১০০ গ্রা.) |
(মিলি গ্রা./১০০ গ্রা.) |
০.৬ |
বাদামি |
৭.৯ |
১.২ |
০.৫ |
২.৮ |
আমরা জানি আমিষ তৈরি হয় নানা রকম এমিনো এসিডের সংযোগে। কমপক্ষে ২০ রকম এমিনো এসিড কম বেশি থাকে আমিষে। এর মধ্যে ৯টি এমিনো এসিড যেমন- হিস্টিডিন, আইসোলিউসিন, লিউসিন, লাইসিন, মিথিওনিন, ফ্যানাইল এলানিন, থ্রিওনিন, ট্রিপটোফ্যান আর ভ্যালিন হলো অত্যাবশ্যক এমিনো এসিড। আর বাকি এগারটি হলো অত্যাবশ্যক এমিনো এসিড। অত্যাবশ্যক এমিনো এসিড মানুষের দেহে উৎপন্ন হয় না। এদের খাবারের সাথে অত্যাবশ্যকভাবে গ্রহণ করতে হয়। চালের আমিষ এই ৮টি এমিনো এসিডে সমপরিমাণে নেই। বরং চালে লাইসিন এবং থ্রিওনিন প্রাণিজ আমিষের তুলনায় বেশ খানিকটা কম পরিমাণে রয়েছে। ভাত হোক গম হোক দুটির ক্ষেত্রেই একথা সত্য। এর অর্থ হলো দানাশস্যের শর্করাজাত ভাত, রুটি গ্রহণ করে এ ঘাটতি মেটানো সম্ভব নয়। এর জন্য অবশ্যই প্রাণিজ খাদ্যের পরিমাণ খানিকটা বাড়াতেই হবে।
অনেকের যুক্তি হলো আগের দিনের মানুষ কি থালা ভরা ভাত খায়নি? তারা কি বেশি দিন বাঁচেনি? তারা কি স্বাস্থ্যবান ছিল না? এটি আসলে কোনো যুক্তিই হতে পারে না। আগের দিনে কেউ কেউ যে অনেক দিন বাঁচেনি তা হয়তো নয়। তারা তো আর কেবল ভাতই খায়নি। সচ্ছল মানুষ আগের দিনে মাছ খেয়েছে, দুধ খেয়েছে, ডাল খেয়েছে, শাকসবজি ফলমূল সবই খেয়েছে। বৈচিত্র্যময় খাবার যে খাবে সে তো কেবল পেট ভরার জন্য ভাতই খেলোনা। দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টিও তো তার পূরণ হলো। তার উপর তখন শাকসবজি ফলমূল সবই ছিল বিষ মুক্ত আর সতেজ। ফলে গড়পড়তা মানুষের চেয়ে যাদের সচ্ছলতা খানিক বেশি ছিল তাদের পুষ্টি নিয়ে তাই ভাবতে হতো না।
সবার জন্যই বৈচিত্র্যময় খাবার গ্রহণের সুযোগ কিন্তু সমান ছিল না। দিন এনে দিন খায় তেমন মানুষই এ দেশে বেশি ছিল। ছিল খাদ্যাভাবও। কত দুর্ভিক্ষ আর দুর্ভোগ এ দেশের মানুষের এক সময় ভোগ করতে হয়েছে সে ইতিহাস অনেকের জানা থাকার কথা। ফলে দুবেলা দু’মুঠো ভাত আহার হিসেবে যোগাড় করতেই বহু মানুষের প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে হয়েছে। ফলে আগের দিনে লোকে পান্তা ভাত খেয়ে ভালো ছিল আর স্বাস্থ্য বড় সুন্দর ছিল এটি কেবল গল্পের মতোই শোনায়। বাস্তবতা তখন তা ছিল না। ফলে ভাতের গুণকীর্তন করে আর এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স দেখিয়ে বেশি করে ভাত খেতে হবে বিজ্ঞান তা স্বীকার করে না। পৃথিবীর কোনো পুষ্টিবিদ এ কথা সমর্থন করবে তা আমার একদম বিশ্বাস হয় না।
পুষ্টির হিসাব নিকাশ খানিকটা এখন দেখা যেতে পারে। কে না জানে যে খাদ্য হিসেবে আমাদের গ্রহণ করতে হবে শর্করা, আমিষ, চর্বি বা তেল, ভিটামিন, খনিজ দ্রব্য আর পানি। এই ছয়টি খাদ্য উপাদানের কোনটি কতটুকু গ্রহণ করতে হবে এক দিনে সেসব আজ হিসাব-নিকাশ করে বেড় করা হয়েছে। মানুষের বয়স আর ওজনকে ভিত্তি করে দেশে দেশে এখন দেহের সঠিক পুষ্টি জোগানোর জন্য চলেছে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের চেষ্টা। আমাদের দেশের জন্যও সুষম খাদ্যের লক্ষ্যে কোন খাদ্য উপাদান কতটুকু গ্রহণ করা হচ্ছে আর কতটুকু গ্রহণ দরকার তাও হিসাব-নিকাশ করে বেড় করা হয়েছে। সে হিসাবটাই বরং দেখি (সারণি- ২)।
সারণি-২: বাংলাদেশী মানুষের খাদ্য গ্রহণের গতিধারা (প্রতিদিন মাথাপিছু, গ্রাম)
খাদ্য |
২০০০ |
২০০৫ |
২০১০ |
কাক্ষিত |
দানাশস্য |
৪৮৭ |
৪৬৯ |
৪৬৪ |
৩৭৫ |
চাল |
৪৫৯ |
৪৪০ |
৪১৬ |
৩৫০ |
ফলমূল |
১৬৯ |
১৯০ |
২১১ |
৪০০* |
শাকসবজি |
৫৫ |
৬৩ |
৭০ |
৬০ |
গোলআলু |
১৬ |
১৪ |
১৪ |
৬০ |
শিম্ব শস্যদানা |
৮৭ |
৯৫ |
১০৯ |
১৮০ |
প্রাণিজাতখাদ্য (ডিম দুধ সহ) |
১৩ |
১৭ |
২১ |
৪০ |
ভোজ্যতেল |
৭ |
৮ |
৮ |
১৮ |
চিনি |
৫০ |
৫৩ |
৬৬ |
২০ |
* জাতিসংঘের WHO/FAO এর হিসাব মতে যে পরিমাণ চাল আমাদের গ্রহণ করা উচিত
২০০০ সনের সাথে ২০১০ সনের খাদ্য গ্রহণের গতিধারা পর্যালোচনা করলে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে যে, দানাশস্যজাত খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ গত দশ বা পাঁচ বছরে খানিকটা কমেছে। চালের ক্ষেত্রে তা কমেছে আরেকটু বেশি। খানিকটা বেড়েছে কিন্তু ফলমূল শাকসবজি গ্রহণের মাত্রা। বেড়েছে গোলআলু গ্রহণের মাত্রাও খানিকটা যা আরেকটুখানি কমলেই বরং ভালো। আশার কথা প্রাণিজাত খাদ্য গ্রহণ খানিকটা বেড়েছে। বেড়েছে ভোজ্যতেল গ্রহণও। চালের ওপর আরেকটু চাপ কমাতে হবে আমাদের নানাবিধ কারণে। সেসব কারণের মধ্যে রয়েছে-
*দৈহিক একজন সুস্থ সবল বয়স্ক মানুষের যে পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ প্রয়োজন তার শতকরা ৬০-৭০ ভাগ আসতে হবে শর্করা জাতীয় খাদ্য থেকে। এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা মহাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। এটি বহুবিধ পুষ্টি গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যজাত নির্ধারিত পরিমাণ। ফলে এ মাত্রা রক্ষা করার জন্য সচেতন হলে তা আমাদের জন্য দুই দিক থেকে লাভজনক হবে। এক, তাতে বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্যের জোগান সহজ হবে এবং দুই, আমরা তাতে ক্রমশ সুষম খাবার গ্রহণ করার দিকে এগোতে থাকব। জাতিসংঘের WHO/FAO এর হিসেব অনুযায়ী আমাদের ভাত গ্রহণ করা উচিত ৪০০ গ্রাম। বাকি ক্যালরি আসবে গম, গোলআলু এবং অন্যান্য খাবার থেকে।
*ভাতের পরিমাণ খানিকটা কমালে এবং তা দিয়ে মাছ মাংস বা ফলমূল খাওয়া খানিকটা বাড়ালে একদিকে যেমন অত্যাবশ্যক এমিনো এসিডের ঘাটতি হ্রাস পাবে অন্যদিকে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির তাতে সংস্থান হবে।
*ভাত গ্রহণের পরিমাণ কমলে ধানের আবাদ খানিকটা কমাতে পারলে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন খানিকটা হ্রাস করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে কোন কোন ধানের জমিতে ডাল-তেল-শাকসবজি বা ফলমূল আবাদ করে এদের ঘাটতি খানিকটা হ্রাস করা সম্ভব হতে পারে।
আগের দিনে এ দেশের মানুষ ঢেঁকিছাঁটা চালই খেতেন। ঢেঁকিছাঁটা চাল মানে চালের আবরণীসহ বাদামি চাল। বাদামি চালে বরাবরই ঢেঁকিছাঁটা চালের তুলনায় বেশি আয়রন, বেশি থায়ামিন, রিবোফ্ল্যাভিন, নিয়াসিন, পাইরিডক্সিন, ফলিক এসিড এবং খাদ্য আঁশও থাকত বেশি পরিমাণে। বাদামি চালের ভিটামিনের পরিমাণের সাথে মসৃণ চালের ভিটামিনের পরিমাণ তুলনা করলে বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মসৃণ চালের চেয়ে বাদামি চালে থায়ামিনের পরিমাণ প্রায় ৫ গুণ বেশি। রিবোফ্ল্যাভিন এবং নিয়াসিনের পরিমাণ সাদা চাল অপেক্ষা বাদামি চালে যথাক্রমে প্রায় ২ এবং ৩ গুণ বেশি। ভিটামিন বি৬-এর পরিমাণ মসৃণ চালের চেয়ে বাদামি চালে ১৫ গুণ বেশি। ফলিক এসিডের ক্ষেত্রে বাদামি চালে তা প্রায় দেড়গুণ বেশি (সারণি-৩)।
সারণি-৩ : ঢেঁকিছাঁটা ও কলেছাঁটা চালে ভিটামিনের মাত্রা
চালের প্রকার থায়ামিন (বি১) রিবোফ্ল্যাভিন (বি২) নিয়াসিন (বি৩) পাইরিডোক্সিন (বি৬) ফলিক এসিড
ঢেঁকিছাঁটা বাদামি ০.৩৪ ০.০৫ ৪.৭ ০.৬২
কলেছাঁটা মসৃণ ০.০৭ ০.০৩ ১.৬ ০.০৪ ২০
চালের লাল আবরণীতে ফ্যাটি এসিড থাকে যা চাল তৈরির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেলে দেয়া হয়। চালের আবরণীতে বিদ্যমান ফ্যাটি এসিড অসম্পৃক্ত প্রকৃতির বলে এগুলো দেহের কোলস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া চালের আবরণীতে টোকোফেরল, টোকোটেরিনল এবং অরাইজানল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও বিদ্যমান। ফলে কলেছাঁটা মসৃণ চাল এখন সত্যি সত্যিই অনেক কম পুষ্টিসমৃদ্ধ। এ চালের ভাত আসলেই বেশি খেয়ে লাভ নেই। বরং এ চালের ভাত খানিক কম খেয়ে অন্য অনেক উৎস থেকে পাওয়া সম্ভব দেহের জন্য বাকি শর্করা।
ভাত আমাদের ছেড়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না। কোনো যুক্তি দেখিয়ে ভাত বেশি গ্রহণ করারও কোনো মানে নেই। বরং দেহের জন্য পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন হলে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে খানিকটা পরিবর্তন আনাই দরকার। একদিনে তা হবে তা নয়, একদিনে হওয়ার প্রয়োজনও নেই। ভেবেচিন্তে সচেতনভাবে আমাদের বৈচিত্র্যময় উৎসজাত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। কেবল যা মন চায় তা নয় বরং যুক্তিসঙ্গতভাবে যা করা প্রয়োজন স্বাস্থ্য ও পুষ্টির স্বার্থে আমাদের তাই করা উচিত। আর শিক্ষিত মানুষের জন্য এ কাজটি করা যে বেশ জরুরি আমার কাছে সব সময় তা মনে হয়।
ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া*
* প্রফেসর, জেনেটিক্স অ্যান্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগ এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭